ঘরের মাঠে ওয়ানডে ফরম্যাটে বিগত কয়েক বছর ধরেই অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ। সেই ধারা বজায় থাকল শ্রীলংকার বিপক্ষেও। তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে লংকানদের নাস্তানাবুদ করে সিরিজ জিতে নিলো টাইগাররা।
সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৩৫ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা। জবাবে ছয় উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। বাকি ছিল আরো ৫৮ বল।
আজ বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন এনামুল হক বিজয় ও তানজিদ হাসান তামিম। লক্ষ্য তাড়ায় বিজয় রয়ে-সয়ে খেললেও আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন তামিম। এরই মাঝে ম্যাচের নবম ওভারে এ জুটি ভাঙেন লাহিরু কুমারা।
লঙ্কান পেসারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে এক্সট্রা কভারে ফার্নান্দোর তালুবন্দি হন বিজয় (১২)। তার বিদায়ে ভেঙে যায় ৫০ রানের উদ্বোধনী জুটি। উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (১)।
অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। পরে উইকেটে এসে তামিমের সঙ্গে জুটি গড়েন তাওহীদ হৃদয়। দুজনের জুটিতে আসে ৪৯ রান। এ সময় আবার আক্রমণে এসে উইকেট নেন কুমারা। তার বলে মাদুশানের তালুবন্দী হন হৃদয়।
আউট হওয়ার আগে ২২ করেন হৃদয়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ক্রিজে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। কুমারার চতুর্থ শিকারে পরিণত হওয়ার আগে করেছেন ১ রান। একপ্রান্তে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন তামিম।
তবে সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে আউট হন তামিমও। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে লং অনে চারিথ আসালঙ্কার তালুবন্দী হন কনকাশন সাব হিসেবে খেলতে নামা এ ওপেনার। ৮১ বলে ৮৪ রান করেন তিনি। মিরাজ আউট হওয়ার আগে ২৫ রান করেন।
একপ্রান্ত আগলে রেখে অপরাজিত ৩৭ রান করেন মুশফিকুর রহিম। তবে লংকানদের নাস্তানাবুদ করেন রিশাদ হোসেন। মাত্র ১৮ বলে ৪৮ রানের অপরাজিত এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। তার ব্যাটেই টাইগারদের জয় ত্বরান্বিত হয়।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করে শ্রীলংকা। দলটির হয়ে যথারীতি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন আভিস্কা ফার্নান্দো ও পাথুম নিশাঙ্কা। তবে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা দুজনই। লঙ্কানদের দুই ওপেনারকে সাজঘরের পথ দেখান তাসকিন আহমেদ।
পরে সাদিরা সামারাবিক্রমার সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন লঙ্কান দলপতি কুশল মেন্ডিস। কিন্তু সাদিরা (১৪) সেটি সম্ভব হয়নি। তবে চারিথ আসালঙ্কার সঙ্গে ৩৩ রানে জুটি গড়েন শ্রীলংকা অধিনায়ক। তবে রিশাদের ঘূর্ণিতে মেন্ডিস বিদায় নিলে ভেঙে যায় তাদের জুটি।
অপরপ্রান্তে হাল ধরে দলীয় রানের চাকা সচল রাখেন আসালঙ্কা। তবে ভয়ংকর হয়ে ওঠা এ ব্যাটারের উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজ। আউট হওয়ার আগে ৩৭ করেন আসালঙ্কা।
এরপর আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন লঙ্কান ব্যাটাররা। তবে শেষ পর্যন্ত দলের হাল ধরেন জেনিথ লিয়ানাগে। দলীয় রানের চাকা ঘোরানোর সঙ্গে সঙ্গে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। এ সময় তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন মহেশ থিকশানা। এই জুটিতে ভর করে শ্রীলংকার ইনিংস থামে ২৩৫ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ। এছাড়াও দুটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।