ভারতীয় পণ্য বর্জনের আগে বউদের শাড়ি পোড়ান: প্রধানমন্ত্রী
ভারতীয় পণ্য বর্জন করার আগে বউদের শাড়ি পোড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা ভারতীয় পণ্য বর্জন করছেন, আমার প্রশ্ন তাদের বউদের কয়খানা ভারতীয় শাড়ি আছে? তাহলে বউদের কাছ থেকে সে শাড়িগুলো এনে কেন পুড়িয়ে দিচ্ছে না? সবাই একটু এই কথাটা বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস করেন।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দলটির আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিলো বিএনপির বহু মন্ত্রীর বউ ভারত যেতো। শাড়ি কিনে এনে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াতো। আমার পরিচিত অনেকজন দেখেছে, আমি নিজেও দেখেছি। একবার প্লেনে যাওয়ার সময় দেখি পাঁচজন এক সঙ্গে, আমি জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার? পাঁচ মন্ত্রীর বউ একই সাথে? কলকাতার এয়ারপোর্টে আমার চেনা জানা লোকজন ছিলো, তো আমি বললাম যাওয়ার সময় কয় সুটকেস আর ফেরার সময় কয়টা সুটকেস আমায় একটু খবর দিও। আমি যাচ্ছিলাম ব্যাঙ্গালুরে আমার সন্তানদের দেখতে। পরে ঠিকই জানালো, আসার সময় একটা করে সুটকেস নিয়ে আসলেও ফেরার সময় ৬/৭টা করে সুটকেস নিয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, বললাম আমার তো আর শাড়ি কেনা লাগবে না। এরা যে নিয়ে যাচ্ছে ওখান থেকেই পাওয়া যাবে কিছু। এই হলো তাদের অবস্থা। আমি বিএনপি নেতাদের বলবো যারা ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন সবার বাড়িতে যেয়ে তার বউদের ভারতীয় শাড়ি অফিসের সামনে এনে পোড়াবেন। সেদিন বিশ্বাস করবো যে আপনারা সত্যিকারে ভারতীয় পণ্য বর্জন করলেন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমাদের দেশে গরম মশলা, পেঁয়াজ, রসুন, আদা যা কিছু ভারত থেকে আসছে তাদের কারো রান্না ঘরে যেনো ভারতীয় মশলা না দেখা যায়। তাদের রান্না করে খেতে হবে এসব মশলা দিয়ে। কাজেই এটা তারা খেতে পারবে কি না এই জবাবটা তাদের দিতে হবে। আপনারা রঙ ঢঙ করতে উস্তাদ, এটা আমরা আগেও দেখেছি। এখন বাস্তবতায় আসুন, আপনারা ভারতীয় পণ্য আসলেই বর্জন করছেন কিনা এই কথাটাই আমরা জানতে চাই।
বিএনপির আরেক নেতা বলে, গণতন্ত্র কোথায়? উনারা নাকি গণতন্ত্র দেখে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, দেখবে কি করে? তাদের চোখে তো স্বৈরতন্ত্রের ছুরি পরা।
মেট্রোরেল হয়েছে এটাই তারা চড়ে না প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে যেনো না উঠে খালেদা জিয়া নির্দেশ দিয়েছিলো, এখন কি তারা পদ্মা সেতু দিয়ে পার হয়, নাকি সাঁতরিয়ে পার হয় নাকি নৌকায়? তাও তো নৌকা লাগবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নাকি গণতন্ত্র নাই? তাহলে গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটা কি? আব্রাহাম লিংকনের সংজ্ঞাটা হচ্ছে গভমেন্ট অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল। আমি যখন আমেরিকায় গিয়েছিলাম তখন এদের জিজ্ঞেস করলাম আপনাদের দেশে তো এই চর্চাটা করেন কিন্তু আমাদের দেশে যখন মার্শাল ল আসে তখন আপনারা এটাকে সমর্থন দেন কেন? জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল জারি করল তখন গণতন্ত্র কোথায় ছিলো? সে সরকার তো হয়ে গিয়েছিলো অব দ্য আর্মি, বাই দ্য আর্মি, ফর দ্য আর্মি। তাহলে কি গণতন্ত্রের সংজ্ঞা বদলে গেলো? আমি নির্বাচিত হলে গণতন্ত্র দেখে না। কিন্তু যখন ক্ষমতা দখল হয় তখন গণতন্ত্র দেখে।