বিপিএলের ইতিহাসে সেঞ্চুরি করেছেন যে বাংলাদেশিরা
খেলাধুলা ডেস্ক: আধুনিক ক্রিকেটে হু হু করে বাড়ছে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের জনপ্রিয়তা। বিশ্বজুড়েই অনুষ্ঠিত হচ্ছে সীমিত ওভারের টুর্নামেন্ট। টি-২০ ক্রিকেটের পাশাপাশি ১০ ওভারের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগও শুরু হয়েছে কোথাও কোথাও। যেখানে অংশ নিয়ে অনবদ্য সব রেকর্ড নিজেদের ঝুলিতে ভরছেন বিশ্বসেরা ক্রিকেটাররা। সময়ের ব্যবধানে সেসব রেকর্ড ভেঙেও দিচ্ছেন অনেকে। বিশ্ব ক্রিকেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও প্রচলন হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের। ২০১২ সাল থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের শিরোনাম ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ’ বা সংক্ষেপে বিপিএল। এখন পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টের দশটি আসর মাঠে গড়িয়েছে। যার মধ্যে সবশেষ আসরটি এখনো চলমান। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট বিপিএলে অসংখ্য রেকর্ড গড়েছেন দেশি-বিদেশী ক্রিকেটাররা। তারা কখনো ব্যাটিংয়ে আবার কখনো বোলিং করে রেকর্ডবুকে জায়গা করে নিয়েছেন। তবে কিছু রেকর্ড সবার ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। আজকের এই প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে বিপিএলের ইতিহাসে সেঞ্চুরি হাঁকানো বাংলাদেশি ব্যাটারদের নিয়ে। যারা বাইশ গজে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেছেন। চলুন একনজরে দেখে নেয়া যাক সেই ব্যাটারদের। শাহরিয়ার নাফিস: বিপিএলে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন সাবেক টাইগার ওপেনার শাহরিয়ার নাফিস। বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ঢাকার বিপক্ষে মাঠে নামে স্বাগতিকরা। ম্যাচটিতে খুলনার হয়ে সেঞ্চুরি করেন নাফিস। ৮৭ বলে ১০২ করেন তিনি। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১২টি চার ও ছয়টি ছক্কায়।
মোহাম্মদ আশরাফুল: একই আসরে সেঞ্চুরির দেখা পান আশরাফুলও। নাফিসের পরপরই এ কীর্তি গড়েন তিনি। ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে খুলনার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন আশরাফুল। ৫৮ বলে ১০৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন এ ব্যাটার। দুই ছয়ের সঙ্গে ১৪টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। সাব্বির রহমান: বাংলাদেশ ক্রিকেটের একসময়ের সম্ভাবনাময়ী ক্রিকেটার সাব্বির রহমান। জাতীয় দলে খেলা অবস্থায় বেশ আলোচনায় ছিলেন। সেইসঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে পারফর্ম করেছেন। ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর মিরপুরের ‘হোম অব ক্রিকেটে’ রাজশাহী কিংসের জার্সিতে সেঞ্চুরি করেন সাব্বির। সেবার তাদের প্রতিপক্ষ ছিল বরিশাল বুলস। ম্যাচটিতে ৬১ বলে ১২২ রানে বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন এ ডানহাতি ব্যাটার। তামিম ইকবাল: একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে বিপিএলের ইতিহাসে দুটি সেঞ্চুরি নিজের দখলে রেখেছেন তামিম ইকবাল। ২০১৯ ও ২০২২ সালে এ কীর্তি গড়েন তিনি। ২০১৯ সালে বিপিএলের ফাইনালে ঢাকা ডাইনামাইটসের বিপক্ষে ৬১ বলে ১৪৪ রানে বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন তামিম। তার ব্যাটে ভর করে চ্যাম্পিয়ন শিরোপা উঁচিয়ে ধরে কুমিল্লা। তামিম দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি করেন ২০২২ সালে। চট্টগ্রামে সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে ১১১ রানের ইনিংস খেলেন। তার শতকটি সাজানো ছিল ৪টি ছয় ও ১৭টি চারে। নাজমুল হোসেন শান্ত: বিপিএলের গত আসরটি দুর্দান্ত কাটিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সে তুলনায় এবার নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন শান্ত, সেকথা বলায় যায়। ২০২০ সালে মিরপুরে ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন শান্ত। তার ৫৭ বলে ১১৫ রান করেন তিনি। তার সেঞ্চুরির ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭টি ছয় ও ৮ বাউন্ডারিতে। তাওহীদ হৃদয়: বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম ভরসার নাম তাওহীদ হৃদয়।
মারকুটে এ ব্যাটার এরই মধ্যে হৃদয় জুড়ানো কয়েকটি ইনিংস খেলেছেন। বিপিএলের গত আসর থেকে ব্যাট হাতে উড়ন্ত ফর্মে আছেন হৃদয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের আসরেও চেনা ফর্মে আছেন। দশম বিপিএলে দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ১০৮ রানের ইনিংস খেলেন হৃদয়। ৫৭ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। তানজিদ হাসান তামিম: এবারের আসরে সবশেষ বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরির খাতায় নাম তুলেছেন চট্টগ্রামের তানজিদ তামিম। খুলনার বিপক্ষে ডু অর ডাই ম্যাচে শতক হাঁকিয়েছেন তিনি। গত ২০ ফেব্রুয়ারিতে সাগরিকার পাড়ে খুলনার বোলারদের তুলোধুনো করে ৬৫ বলে ১১৬ করেন তামিম। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৮টি করে চার ও ছয়ে।