রাখাইনের রাজধানী দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) কাছে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ হারাতে চলেছে দেশটিতে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই প্রদেশটির রাজধানী সিতওয়ের সীমানার বাইরের বিভিন্ন এলাকা ঘেরাও করে ফেলেছে এএ যোদ্ধারা।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, সোমবার (৪ মার্চ) রাখাইনের পোন্নাগিউন শহর থেকে জান্তাবাহিনীর ৫৫০ পদাতিক ব্যাটালিয়নকে উৎখাত করে শহরটির দখল নেয় আরাকান আর্মির সদস্যরা। এর মধ্যে দিয়ে রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ের আরো কাছাকাছি পৌঁছে গেল তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পোন্নাগিউন শহরটি সিতওয়ে থেকে মাত্র ৩৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই মুহূর্তে আরাকান আর্মি রাজধানী সিতওয়েকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে।
আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পোন্নাজ্ঞিয়ুন শহরের দখল নিয়ে লড়াইয়ের সময় জান্তাবাহিনী যুদ্ধবিমান ও জলজ যুদ্ধযান থেকে ব্যাপক গোলা ও বোমা বর্ষণ করেছে। কিন্তু তারপরও তারা শহরটি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
গোষ্ঠীটি আরও দাবি করেছে, পোন্নাজ্ঞিয়ুনে পতনের পর জান্তাবাহিনীর যুদ্ধবিমান শহরটির সঙ্গে রথিডঙের সংযোগ সেতু জাই তি পিন বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়।
গত বছরের নভেম্বরে জান্তাবিরোধী অভিযান শুরু করার পর থেকে আরকান আর্মি এখন পর্যন্ত রাখাইন ও চিন রাজ্যের মোট ৮টি শহর দখল করে নিয়েছে। জান্তার বিপুল সংখ্যক ঘাঁটিও দখল করে নিয়েছে গোষ্ঠীটি।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির দলকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে জেনারেল মিন অং হ্লাইং নেতৃত্বাধীন সামরিক জান্তা। এরপর থেকেই দেশটির বিভিন্ন জায়গায় জোরালো হতে থাকে জান্তা বিরোধী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। তবে সময়ের ব্যবধানে পাল্টাতে থাকে সেই চিত্র। বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী তাদের শক্তি আরও বাড়িয়ে পুরো দেশে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে মিয়ানমার পরিস্থিতি।
দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের সঙ্গে সীমান্তবর্তী প্রদেশে সামরিক সরকারের লড়াই এখন তুঙ্গে। বিদ্রোহীদের হামলায় শান ও রাখাইন প্রদেশে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সামরিক জান্তা। এমনকি রাখাইনে আরাকান আর্মি যেভাবে শক্তি বাড়িয়ে বিভিন্ন এলাকা দখল করে নিচ্ছে এতে বিচলিত হয়ে পড়েছে মিয়ানমার সরকার।