Sunday, May 12, 2024
Google search engine
Homeবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষধর সাপের ‘সার্বজনীন অ্যান্টিভেনম’ তৈরি করলো গবেষকরা

বিষধর সাপের ‘সার্বজনীন অ্যান্টিভেনম’ তৈরি করলো গবেষকরা

বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর বিষধর সাপের কামড়ে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আর বেঁচে গেলেও বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভোগেন অনেকে। কারণ, সাপে কামড়ালে তার জন্য সঠিক অ্যান্টিভেনম না পাওয়া।

আবার প্রজাতি ভেদে অ্যান্টিভেনম আলাদা হওয়ার ফলে অনেক ক্ষেত্রে দংশনকারী সাপ চিহ্নিত করা যায় না। এতে সঠিক অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা যায় না। আবার কিছু প্রজাতির সাপের অ্যান্টিভেনমও খুঁজে পওয়া যায় না।

এই সমস্যা সমাধানে গোখরা, শঙ্খিনী ও ব্ল্যাক মাম্বার মতো বিষধর সাপের সর্বজনীন অ্যান্টিভেনম তৈরি করছেন গবেষকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইমিউনোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান গবেষক আইরিন এস খালেক ও তার সহকর্মীরা সর্বজনীন অ্যান্টিভেনম তৈরির ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি সায়েন্স ট্রান্সলেশন মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই অ্যান্টিভেনম যেকোনো বিষধর সাপের বিষের প্রভাবকে প্রশমিত করতে সহায়তা করতে পারে। তাই এটিকে ‘সার্বজনীন অ্যান্টিভেনম’ বলা হচ্ছে।

বর্তমানে প্রচলিত যে অ্যান্টিভেনম রয়েছে তা ঘোড়ার শরীরে অল্প পরিমাণে সাপের বিষ ঢুকিয়ে তৈরি করা হয়। ফলে এই পদ্ধতির বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে।

গবেষণাগারে পরিবর্তিত জিন বিশিষ্ট কোষ ব্যবহার করে অ্যান্টিবডি তৈরি করা হয়। বিশেষ করে মানুষের ক্যানসার ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সমস্যা সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসায় এ ধরনের অ্যান্টিবডি ব্যবহার করা হয়। গবেষকেরা আশা করেন, একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অ্যান্টিভেনমও তৈরি করা যাবে এবং এই অ্যান্টিভেনম প্রথাগত অ্যান্টিভেনমকে প্রতিস্থাপিত করবে।

সাপের বিষের মধ্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী হলো নিউরোটক্সিন। আফ্রিকান ব্ল্যাক মাম্বা, এশিয়ান কেউটে, বিভিন্ন জাতের গোখরা এবং ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাপ্ত বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক বিষধর শঙ্খিনী সাপের নিউরোটক্সিন পাওয়া যায়। আর নিউরোটক্সিন মস্তিষ্ক থেকে সংকেত বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের পেশিতে পৌঁছাতে বাধা দেয়। ফলে মানুষ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়, শরীর অবশ হয়ে আসে। এই বিষ মানুষের ফুসফুসের অনৈচ্ছিক পেশিকেও অবশ করে দেয়। ফলে ফুসফুসের সংকোচন–প্রসারণ থেমে গিয়ে দ্রুত শ্বাসবন্ধ হয়ে মানুষ মারা যায়।

নতুন অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহযোগিতা নেয়া হয়েছে। ৫ হাজার কোটি অ্যান্টিবডি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এই নতুন অ্যান্টিবডি আবিষ্কার করা হয়েছে। এই অ্যান্টিবডি বিভিন্ন প্রজাতির সাপের নিউরোটক্সিন শনাক্তের পাশাপাশি এগুলোর ভয়ংকর প্রভাব প্রশমিত করতে পারে।

নতুন অ্যান্টিভেনমটি ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথম ইঁদুরের শরীরে সাপের বিষ ঢুকিয়ে দেয়া হয়। পরে নতুন অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের ফলে ইঁদুরকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে ও বাঁচিয়ে দেয়। প্রতিবার পরীক্ষায় একই ফলাফল পাওয়া গেছে। এই ফলাফল একটি সর্বজনীন অ্যান্টিভেনম বিকাশের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments