জাতীয়শিক্ষা

শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দিতে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

অভিভাবক ও শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে খেলাধুলা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেন শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি সৌধ প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ আহ্বান জানান তিনি। জাতির পিতার কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, লেখাপড়া খুবই দরকার কিন্তু এই লেখাপড়ার নামে তাদের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করবেন না। আমরা এখন চাচ্ছি খেলাধুলা এবং নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই তারা তাদের লেখাপড়া শিখবে, যেন তার ভেতরের সুপ্ত প্রতিভা ও মেধা বিকাশের সুযোগ হয়।

সততা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা, জাতীয় দিবসগুলো সম্পর্কে শিক্ষাদান এবং রাস্তায় চলার নিয়ম কানুন তথা ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সম্যক ধারনা ছোটবেলা থেকেই দেওয়ার জন্য অভিভাবক-শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকের শিশুদের কাছে এটাই আমার অনুরোধ গুরুজনদের মানতে হবে, শিক্ষককে মানতে হবে, বাবা-মার কথা শুনে চলতে হবে, বাবা মার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তাহলে কেউ বিপথে যাবে না।

শিক্ষক-অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির থেকে দূরে থাকার জন্য ছোটবেলা থেকেই সততার শিক্ষা দিতে হবে। সেই সঙ্গে গান-বাজনা ও লেখাপড়া, ছবি আঁকা থেকে শুরু করে ধর্মীয় শিক্ষাসহ সব ধরনের কারিকুলামের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ এবং মেধা ও মননের উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যেই তার সরকার কারিকুলাম তৈরি করে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভিভাবক ও শিক্ষক আপনাদের কাছেও আমার এই অনুরোধ থাকবে ছোটবেলা থেকেই তাদের ভেতরে যেন মানবিক গুণগুলো গড়ে উঠতে পারে, সেদিকে যেমন দেখবেন তেমনি এই শিশুদের ভেতরে যে সুপ্ত প্রতিভা ও মেধা রয়েছে সেই সুপ্ত প্রতিভা এবং মেধা ও মনন বিকাশের সুযোগ যেন তারা পেতে পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখবেন।

সরকার প্রধান বলেন, এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখনতো শিশুরা বিশ্বকে চোখের সামনে দেখতে পায়। কাজেই ক্লাসে শুধু বই পড়া নয়, চোখে দেখেও যেন তারা শিখতে পারে। আর আজকের শিশুরাই হবে আগামী দিনের ‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক’। আর সেটাই আমাদের সরকারের কাম্য।

তিনি বলেন, আমি চাই আমাদের দেশের প্রতিটি শিশু যেন সুন্দর, নিরাপদ এবং উন্নত জীবন পায় সেটাই আমার সরকারের কাম্য।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রীমি) বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

শিশু বক্তা তায়্যেবা তাসনীমও স্বাগত বক্তৃতা করেন। অপর শিশু পিয়াসা জামিল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আব্দুর রহমান এবং লামিয়াতুল বারী শিশুদের এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও শিশু অধিকার শীর্ষক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস -২০২৪ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার ১০৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে মোট ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থী পেয়েছেন ৫ হাজার টাকা করে। নির্বাচিত দুই শিক্ষার্থী-টুঙ্গিপাড়া উপজেলার মুশফিকা জান্নাতী ও কোটালীপাড়া উপজেলার আরাফাত শেখ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button