অড়বরইয়ের অনেক পুষ্টিগুণ
অড়বরই রোমশবিহীন পর্ণমোচী বৃক্ষ। এর বৈজ্ঞানিক নাম চযুষষধহঃযঁং ধপরফঁং। অড়বরই আমলকীর নিকটাত্মীয়। গাছ গুল্ম ও বৃক্ষের মাঝামাঝি পর্যায়ের। মূলত অড়বরই চাষ করা হয় না, তবে নানা দেশে এটা শোভাবর্ধক গাছ হিসেবে লাগানো হয়। ৪-৫ মিটার উঁচু এই গাছ দেখতে অনেকটা কামরাঙা গাছের মতো। গাছে গোলাপি রঙের থোকা থোকা ফুল ধরে মার্চ-এপ্রিল মাসে। আগস্টের শেষ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়।
ফলের গায়ে খাঁজকাটা থাকে, তাই দেখতে অনেকটা ছোট তারার মতোই লাগে! পাকা ফল হলুদ ও হলুদাভ সবুজ হয়। ফলের ভেতরে গাঢ় সবুজ রঙের আঁটি থাকে। এই আঁটির ভেতর ৬-৮টি মসৃণ, ছোট্ট বীজ থাকে। টক স্বাদের পাকা অড়বরই ঝাল-লবণ দিয়ে মাখিয়ে খেতে ভীষণ মজা লাগে! এছাড়া এটা দিয়ে আচার, জুস, জেলি, চাটনি ইত্যাদিও তৈরি করা হয়। অনেকে এটা দিয়ে চমত্কার টক রান্না করেন বা ভর্তা তৈরি করেন। অড়বরইয়ের রস ভিনেগার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। গাছের কচিপাতা বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডে শাক হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়।
পুষ্টিগুণ:
প্রতি ১০০ গ্রাম অড়বরইয়ে রয়েছে জলীয় অংশ ৯১.৯ গ্রাম আমিষ ০.১৫৫ গ্রাম চর্বি ০.৫২ গ্রাম খাদ্যআঁশ ০.৮ গ্রাম ক্যালসিয়াম ৫.৪ মিলিগ্রাম ফসফরাস ১৭.৯ মিলিগ্রাম আয়রন ৩.২৫ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন ০.০১৯ মিলিগ্রাম থায়ামিন ০.০২৫ মিলিগ্রাম রিবোফ্লেভিন ০.০১৩ মিলিগ্রাম নিয়াসিন ০.২৯২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ৪.৬ মিলিগ্রাম। অড়বরইতে কোনো ক্যালরি নেই। তাই বিনা দ্বিধায় খেতে পারেন এই চমত্কার ফলটি।
অড়বরইয়ের ভেষজ গুণাগুণ-
১. অড়বরইয়ের বীজ লিভারের অসুখের টনিক হিসেবে ব্যবহার হয়।
২. পেটের অসুখে অড়বরইয়ের বীজ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৩. অড়বরইয়ের বীজ খেলে কৃমি ভালো হয়।
৪. অড়বরইয়ের রস খেলে অকাল বার্ধক্য রোধ হয়।
৫. অড়বরই ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৬. অড়বরইয়ের রস চুলের গোড়ায় লাগালে চুল মজবুত হয় ও খুশকি দূর হয়।
৭. মৌসুমি জ্বরে অড়বরই ফল খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৮. অড়বরই খেলে মুখের অরুচি ভাব কেটে রুচি ফিরে আসে।