ধর্ম

স্বাস্থ্য ও চলাফেরা দেখে নয়, দান করুন মুক্তহস্তে

সমাজের অনেকেই দান-সদকা করতে যেয়ে খুব চিন্তা করেন। দানগ্রহীতার স্বাস্থ্য, চলাফেরা ইত্যাদি দেখে তাকে ভণ্ড কিংবা প্রতারক ভাবেন। এমন চিন্তা করতে করতে শেষ পর্যন্ত আর দানই করা হয় না। এমনকি, যারা নিয়মিত কিছু দান করেন, তারাও ধীরে ধীরে দান করা কমিয়ে দিতে থাকেন।

আবার এমনও অনেকে আছেন, একদিন যে আপনার কাছে ভিক্ষা চেয়েছে- পরেরদিন চাইলে আপনি বিরক্তি দেখান। বলে ওঠেন, ‘কাল তো দিয়েছিলাম, আজকে আবার চাচ্ছো ক্যান,’ ‘ভিক্ষা করতেছো কেন, কাজ করতে পারো না’ ইত্যাদি ইত্যাদি।

হ্যাঁ, দান চাওয়া ভিক্ষুক কিংবা সাহায্যপ্রার্থী প্রতারক কি না, কাজ করে না কেন- এমন চিন্তা-ভাবনা মনে আসতেই পারে, কিন্তু এর জন্য যদি আপনি দান করা থেকে বিরত থাকেন, তাহলে আপনার কোনো নেকি হবে বলেন? শুধু শুধু আপনি বঞ্চিত হলেন, সওয়াব থেকে।

পূর্ববর্তী বুজুর্গরা কখনো কারও কাছে ১ টাকা ধার চাইতেন না, একদম দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ছাড়া। এমন কঠিন আত্মমর্যাদা থাকা সত্ত্বেও তারা দানের ক্ষেত্রে ছিলেন উদার, সবাইকে মুক্ত হস্তে দান করতেন। আপনার মতো বিচারক মনোভাবের লোক ছিলেন না। তারা ভিক্ষাবৃত্তি কঠিনভাবে অপছন্দ করতেন, অন্যদিকে কেউ চাইলে খুব খুশি হতেন। কারণ তারা ভাবতেন, এইতো সুযোগ দান করার। তারা জানেন, দয়াময় আল্লাহ দেখবেন ‘ইখলাস’ (একনিষ্ঠতা) ও ‘নিয়ত।’ আল্লাহতায়ালা জিজ্ঞাসা করবেন না, অমুক ভিক্ষুকের গোপন বাড়ি, ব্যাংক-ব্যালেন্স আছে কি না দেখলে না কেন?

সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ জানেন, আমাদের ব্যস্ত জীবনে আমাদের হাতে খুব সময় নেই, কে কেমন, কার অন্তরে কী তা যাচাই করার, আমরা বাহ্যিক অবস্থা দেখে বিচার করব, অন্তরের বিষয় আল্লাহর কাছে সমর্পণ করব।

তবে হ্যাঁ, জাকাত কিংবা বড় অঙ্কের দানের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই করে নেবেন, খুঁজে দেখবেন এমন কোনো আত্মমর্যাদাশীল অভাবী আছে কি না- যে কারও কাছে চাইতে লজ্জাবোধ করে। তাকে দান করুন। আর অহেতুক চিন্তা-ভাবনা না করে ছোট অঙ্কের নিয়মিত দান সাহায্যপ্রার্থী কিংবা ভিক্ষুককে নিশ্চিন্তে দান করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button