জাতীয়

আউন্সপ্রতি ২৩০০ ডলারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে স্বর্ণের দাম

আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৩০০ ডলারের গণ্ডি অতিক্রম করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সম্প্রতি সুদহার কমানোর ইঙ্গিত দেয়ায় মূল্যবান ধাতুটির দাম প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে। খবর রয়টার্স।

স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। লেনদেনের শুরুতে প্রতি আউন্সের দাম ওঠে ২ হাজার ৩০৪ ডলার ৯ সেন্টে, যা এ-যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সকাল ১০টার দিকে আউন্সের মূল্য দাঁড়ায় ২ হাজার ২৯১ ডলার ৬৫ সেন্টে। অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩১১ ডলার ২০ সেন্টে পৌঁছেছে।

স্বর্ণ মূলত নন-ইল্ডিং অ্যাসেট। অর্থাৎ এটি থেকে কোনো ধরনের সুদ পান না বিনিয়োগকারীরা। ফলে ব্যাংক সুদহার কমে গেলে ইল্ডিং অ্যাসেট হিসেবে বিবেচিত বিল, বন্ড ও নোটের মতো সিকিউরিটিজগুলোর পরিবর্তে স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে যায়।

বাজার বিশ্লেষক কার্লো আলবার্টো দে কাসা বলেন, ‘‌এশিয়ার দেশগুলোয় স্বর্ণের চাহিদা বাড়ছে। বিশেষ করে চীনে চাহিদা বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয়ও ধাতুটির ব্যাপক চাহিদা লক্ষ করা যাচ্ছে। বাজারে ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি যেমন রয়েছে, তেমনি বিশ্বজুড়ে সুদহার কমানোর সম্ভাবনাও বাড়ছে। এসব কারণেই মূলত স্বর্ণের দাম বেড়ে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

মুদ্রাবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুনের মধ্যে ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার কমাতে পারে। বুধবার ফেড চেয়ার জেরোমি পাওয়েল ও অন্য কর্মকর্তারা জানান, সুদহার কমানোর জন্য আরো তথ্য ও আলোচনার প্রয়োজন। সিএমই ফেডওয়াচ টুলের তথ্যমতে, বর্তমানে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, জুনের মধ্যে ফেডের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা ৫৯ শতাংশ।

বর্তমানে বিনিয়োগকারী ও বাজারসংশ্লিষ্টরা যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির বাজারসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের অপেক্ষায় আছেন। গত মার্চে কৃষি ছাড়া অন্যান্য খাতে কত সংখ্যক কর্মসংস্থান হয়েছে এবং কত মানুষ বেকারত্বের মুখে পড়েছে, তা এ প্রতিবেদনে উঠে আসবে। এ প্রতিবেদনকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির একটি বড় নির্দেশক হিসেবে ধরা হয়। চাকরির বাজার পরিস্থিতি হতাশাজনক হলে ফেডের জন্য সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হবে। কিন্তু চাকরির বাজার ভালো থাকলে সুদহার কমানোর ক্ষেত্রে আরো বিচার-বিবেচনা করতে হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটিকে। এ প্রতিবেদনে প্রকাশের ওপর ভবিষ্যতে স্বর্ণের বাজারে উত্থান-পতন অনেক বেশি নির্ভর করছে।

যুদ্ধ ও যেকোনো ধরনের সংকটসহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময় স্বর্ণকে সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংঘাত ও অস্থিরতা ধাতুটির চাহিদা বাড়াচ্ছে। এতে রসদ জোগাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ঊর্ধ্বমুখী ক্রয় প্রবণতাও। গত বছরের অক্টোবরের পর থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ধাতুটির চাহিদা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে।

এদিকে গতকাল আন্তর্জাতিক বাজারে রুপার দাম দশমিক ৬ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ২৭ ডলার ৪ সেন্টে নেমেছে। তবে প্লাটিনামের দাম দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে উঠেছে ৯৩৯ ডলার ৬০ সেন্টে। প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ৪ ডলার ৩৬ সেন্টে ঠেকেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button