দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে ঈদের আনন্দ ভ্রমণ
সোহাগ হাফিজ নিজস্ব সংবাদদাতা: মাথায় বাঁধানো লাল পট্টি। একটি ছোট পিকাপ ভ্যানে ২৫-৩০ জন কিশোর, যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৫ এর মধ্যে। নিয়ন্ত্রণহীন গতিতে ছুটে চলা পিকাপ ভ্যানে উচ্চশব্দে চলছে গান। গানের তালে চলন্ত গাড়িতে নেচে গেয়ে উল্লাসে মেতেছেন কিশোরেরা।
এদের কয়েক জনের হাতে সিগারেট ও কোমল পানীয়র বোতল। নিরাপত্তা বলতে আছে শুধু পিকাপ ভ্যানের দুদিকের বেষ্টনী। চালক হঠাৎ ব্রেক কষলেই হুমরি খেয়ে একজনের উপর আরেকজন পড়ছেন কিশোরেরা। যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
শুধু পিকাপ ভ্যান নয়। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায়ও ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়ে ঈদের আনন্দ ভ্রমণে বের হয়েছেন কিশোরেরা। ভেতরে যায়গা না হওয়ায় কেউ কেউ অটোরিকশার ছাদেও উঠে পড়ছেন।
ঈদের দিন বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে এই চিত্র দেখা যায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার উলিপুর-রাজারহাট সড়কে। শুধু উলিপুর উপজেলা নয়, কুড়িগ্রামের প্রায় সব উপজেলার চিত্র প্রায় একই রকম।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার রতীগ্রাম এলাকার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মোরশেদুল হক। প্রায় ৩০ জনের একটি দল নিয়ে একটি পিকাপ ভ্যান ভাড়া করে ঘুরতে বেরিয়েছেন তিনি। পিকাপের সারাদিনের ভাড়া ঠিক করা হয়েছে সাড়ে ৫ হাজার টাকা।
মোরশেদুল হক বলেন, ঈদের এলাকার বন্ধুরা সবাই বাসায় থাকি। তাই প্রতি বছর এভাবে আমরা ঘুরতে বের হই। ঝুঁকি আছে কিনা জিজ্ঞেস করলে হেসে উড়িয়ে দেন তিনি।
ঈদ আসলেই বাড়ে গণপরিবহনে ভাড়া। তাই টাকা বাঁচানোর জন্য একটি অটোরিকশা ভাড়া করে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়েই ঈদ আনন্দ ভ্রমণে বের হয়ে পড়েন কিশোরেরা। ১২ জন যাত্রী থাকা একটি অটোরিকশা থামিয়ে জানতে চাইলে যাত্রী মাসুম (১৫) বলেন, ১২ জনের জন্য ২টা অটো নিলে লস হয়। আবার একটা অটোতে লোক ধরেনা। তাই একটু অসুবিধা হলেও একটা অটো ভাড়া নিছি।
ঈদে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে কুড়িগ্রামে জেলা পুলিশ। এমন পরিস্থিতির খবর পাওয়ার পর কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মো মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এসব আনন্দ ভ্রমণ কাম্য নয়। আমরা এব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।