টগর মূলের ঔষধি গুণ
টগর ঝোপঝাড়বিশিষ্ট চিরহরিৎ গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Tabernaemontana divaricata (L.) Br.। যা Apocynaceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এটি গর্ভশীর্ষ পুষ্প।
বাংলাদেশের বনে-বাদাড়ে টগর এমনিতেই জন্মে। টগরের কাণ্ডের ছাল ধূসর। গাছের পাতা বা ডাল ছিঁড়লে সাদা দুধের মতো কষ ঝরে বলে একে ‘ক্ষীরী বৃক্ষ’ বলা যায়। পাতা ৪-৫ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা ও এক দেড় ইঞ্চি চওড়া হয়। টগর দুই রকম- থোকা টগর ও একক টগর। পাতার আগা ক্রমশ সরু। ফুল দুধ-সাদা। সারা বছর ফুল ফোটে। থোকা টগরের সুন্দর মৃদু গন্ধ হয় কিন্তু একক টগরের গন্ধ নেই। ফুল থেকে ফলও হয়। তার মধ্যে ৩ থেকে ৬ টি বীজ হয়।
বড় টগরের বোঁটা মোটা এবং একক ফুল হয়। পাতাও একটু বড়। ঝাঁকড়া মাথার জন্য টগর গাছ দেখতে সুন্দর। বহু শাখা-প্রশাখা নিয়ে ঝোঁপের মতো টগর গাছ বাগানের শোভা বাড়ায়। সুন্দর করে ছেঁটে দিলে চমৎকার ঘন ঝোঁপ হয়। কলম করে চারা করা যায়, আবার বর্ষাকালে ডাল পুতলেও হয়। টগর গাছ বাংলাদেশ ও ভারতে জন্মে। টগর গাছের মূল ও শেকড় ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
উপকারিতা
১। টগর গাছের শেকড় বা মূল তেঁতো বিধায় টগরের মূল সিদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে কৃমি ভালো হয়। কৃমি হলে টগরের মূলের ছাল তুলে শুকিয়ে পাটায় পিষে মিহি করে ১ চামচ চুনের পানি মিশিয়ে তিনদিন সকালে খালি পেটে খেলে সেই সমস্যা থাকে না।
২। গায়ে চুলকানির সমস্যা হলে টগর গাছের শেকড় সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে উপকার পাওয়া যায়।
৩। ঘামাচি হলে টগরের কাঠ ঘষে প্রতিদিন চন্দনের মতো গায়ে মাখলে উপকার পাওয়া যায়।
৪। দাঁত ও মাড়ির যতেœ টগর গাছের ভূমিকা অপরিসীম। টগরের কাঁচা ডাল চাবালে দাঁত শক্ত হয়, রক্ত পড়া বন্ধ হয় এমনকি দাঁতের ব্যথাও ভালো হয়।
৫। অনেকে বড় হলেও ঘুমের মধ্যে বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলে। এই সমস্যায় কিছুদিন টগর গাছের মূল গুড়া করে পানিতে মিশিয়ে প্রতিরাতে ২ চামচ করে খেলে উপকার পাওয়া যায়