আন্তর্জাতিকজাতীয়

ঢাকায় ইসরায়েলের বিমান

ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে একটি ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটের দিকে বিমানটি অবতরণ করে। এভিয়েশন খাত নিয়ে যাদের আগ্রহ রয়েছে, তারা বাংলাদেশের আকাশসীমার কাছাকাছি আসার আগ থেকেই কৌতূহলী নজর রাখছিলেন এই ফ্লাইটের দিকে। ইসরায়েল থেকে কেন সরাসরি ফ্লাইটটি ঢাকায় এলো, এই প্রশ্ন সবার মনে দেখা দিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ইসরায়েল ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা আছে। কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশি পাসপোর্টে লেখা ছিল, ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’। জাতিসংঘভুক্ত যে ২৮টি দেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে যে ফ্লাইটটি এসেছিল, সেটি অপারেট করেছে ন্যাশনাল এয়ারলাইন্স। বোয়িং ৭৪৭-৪০০ মডেলের উড়োজাহাজটি তেল আবিব থেকে প্রায় ৬ ঘণ্টা উড়ে ঢাকায় আসে। কৌতূহলীদের প্রশ্ন, কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, তাহলে ইসরায়েল থেকে ফ্লাইট এলো কেন?

জানা গেছে, ন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ইসরায়েলের কোনো এয়ারলাইন্স নয়। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি এয়ারলাইন। ১৯৯১ সালে ক্রিস্টোফার আলফ এই এয়ারলাইনের যাত্রা শুরু করেন। ন্যাশনাল এয়ারলাইন অন-ডিমান্ড কার্গো এবং চার্টার্ড যাত্রীদের জন্য ফ্লাইট পরিচালনা করে। বাংলাদেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট নেই, ফলে দেশটির কোনো এয়ারলাইনের ফ্লাইট বাংলাদেশে আসতে পারবে না। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট রয়েছে। ফলে দেশটির যে কোনো এয়ারলাইন বাংলাদেশে আসতে পারবে, একইভাবে বাংলাদেশি এয়ারলাইনের ফ্লাইটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারবে। ফলে ন্যাশনাল এয়ারলাইন্স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারলাইন হওয়ায় বাংলাদেশে আসতে কোনও বাধা নেই।

এর আগেও বাংলাদেশে ন্যাশনাল এয়ারলাইনের ফ্লাইট এসেছিল। বিভিন্ন সময়ে কার্গো পণ্য নিতে এয়ারলাইনটির ফ্লাইট বাংলাদেশ আসে। মূলত, ইসরায়েলে পণ্য নামিয়ে খালি বিমান এসেছিল বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিতে, যা মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে নিয়ে যাবে এয়ারলাইনটি।

হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ন্যাশনাল এয়ারলাইনের ফ্লাইটটি মূলত ফেরি ফ্লাইট ছিল। আমেরিকান এই এয়ারলাইনের উড়োজাহাজটিও আমেরিকায় নিবন্ধিত। ইসরায়েল থেকে ফ্লাইটটি এলেও কোনো পণ্য বা যাত্রী ঢাকায় আসেনি। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক নিতে এসেছিল কার্গো ফ্লাইটটি, যা শারজাহ ও ইউরোপের গন্তব্যে যাবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button