বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি চেয়েও ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় বেড়েছে। গত মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৬ কোটি ৪ লাখ ডলার। সে হিসাবে এক বছরের আগের একই মাসের তুলনায় গত ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১০ কোটি ৯ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৫০৬ কোটি ৬৬ লাখ বা ১৫ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসীরা ১৪ দশমিক শূন্য ১ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ।
বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে রেকর্ড ১৩ লাখ ৫ হাজার ৪৫৩ জন বাংলাদেশী জীবিকার সন্ধানে অভিবাসী হয়েছেন। এর আগে ২০২২ সালে অভিবাসী বাংলাদেশীর সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন। অর্থাৎ গত দুই বছরে ২৪ লাখের বেশি বাংলাদেশী কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ গেলেও রেমিট্যান্স সে অনুপাতে বাড়েনি।
চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় বিপর্যয় হয়েছিল। বিশেষ করে গত আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬০ কোটি ডলার। আর সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৩৩ কোটি ডলারে নেমে যায়। মূলত ডলারের বিনিময় হার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর হওয়ায় রেমিট্যান্সে বড় পতন হয়। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিনিময় হার নিয়ে উদার হলে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ফিরে আসে।
দেশের একাধিক ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী জানান, রেমিট্যান্স কেনার ক্ষেত্রে গত মাসে প্রতি ডলারের ঘোষিত দর ছিল ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। যদিও এ দরে দেশের কোনো ব্যাংকই রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে পারছে না। কিছু ব্যাংক ১২০ টাকারও বেশি দরে রেমিট্যান্সের ডলার কিনছে। ঘোষিত দরের চেয়ে বেশি দামে রেমিট্যান্সের ডলার কেনায় ইতোপূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংককে জরিমানা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল। এ কারণে গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ আশঙ্কাজনক হারে কমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেই যে কোনো মূল্যে রেমিট্যান্স আনার জন্য উত্সাহ দেয়া হচ্ছে। এ কারণে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে