এসআইসির সঙ্গে জোট করছে ইমরান খানের দল পিটিআই
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থীরা।
জাতীয় পরিষদের সংরক্ষিত আসনের জন্য এসআইসির সঙ্গে এই জোট গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পিটিআইয়ের একাধিক সূত্র দেশটির সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজকে জানিয়েছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে এআরওয়াই নিউজ বলেছে, পিটিআই স্বতন্ত্র সদস্যরা হলফনামা জমা দেওয়ার পর ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে যোগ দেবেন। যদিও এর আগে দেশটির আরেক রাজনৈতিক দল মজলিশ ওয়াহদাত-ই-মুসলিমিনের (এমডব্লিউএম) সঙ্গে কেন্দ্রে এবং পাঞ্জাব প্রদেশে জোট গঠন করার ঘোষণা দিয়েছে পিটিআই। কিন্তু এই ঘোষণার পর দলের কিছু সদস্য এমডব্লিউএমের সঙ্গে জোট গড়ার বিরোধিতা করেন।
ওই সময় পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক রউফ হাসান বলেন, ‘ইমরান খান দুই দলের সঙ্গে জোটের অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে এমডব্লিউএমের সঙ্গে জোট গঠন করব এবং সংরক্ষিত আসনের জন্য খাইবার পাখতুনখাওয়ায় জামায়াতে-ই-ইসলামির (জেআই) সঙ্গে জোট গড়ব।’
তবে রোববার পিটিআইয়ের একাধিক সূত্র বলেছে, তারা কেন্দ্র এবং পাঞ্জাবে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এসআইসির প্রেসিডেন্ট হামিদ রাজাও পিটিআইয়ের সমর্থনেই বিজয়ী হন। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন তিনি।
এআরওয়াই নিউজকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে হামিদ রাজা বলেছেন, ‘পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশে পিটিআইয়ের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে মীমাংসা হয়েছে। আমরা কেন্দ্র, খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং বেলুচিস্তানেও জোট গঠনে প্রস্তুত রয়েছি।’
অনিশ্চয়তা ও ব্যাপক আলোচনার মধ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৬৫ আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্ররা ৯২টি আসনে জয় পান। নওয়াজ শরিফের মুসলিম লীগ (পিএমএলএন) পায় ৭৫টি আসন। আর বিলাওয়াল ভু্ট্েটা জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪টি আসনে জয় তুলে নেয়। বাকি আসনগুলো পায় ছোট দলগুলো।
নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল। নির্বাচন হওয়ার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও— কোনো দল সরকার গঠন করবে সেটি এখনো নিশ্চিত হয়নি। নির্বাচন শেষ হওয়ার পরপর সরকার গঠনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছিল নওয়াজ শরিফের পিমএলএন। তারা বিলাওয়াল ভু্ট্েটার পিপিপির সঙ্গে জোট গঠনের চেষ্টা শুরু করে। তবে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পিপিপি প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জানান তারা জোট সরকারে যোগ দেবে না।
এদিকে, রোববার ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) মনোনীত প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ওমর আইয়ুব খান বলেছেন, কেন্দ্র ও প্রদেশগুলোতে সরকার গঠন করবে পিটিআই।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ ইমরান খানকে চায়। জনগণের ম্যান্ডেট মেনে নিতে তিনি দেশটির অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন।
ওমর আইয়ুব বলেছেন, এই দলগুলো ৪০টি আসনও জিততে পারেনি। তাদের এবং অন্য সবাইকে জনগণের কথা শুনতে হবে। দেশের জনগণ ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেনে নিয়েছে এবং তারা সুন্দর পাকিস্তান চায়