অপরাধজাতীয়বিশ্ব

৩০ হাজার টাকায় রোহিঙ্গা হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশি

মাত্র ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে আশ্রিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষ হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নাগরিক।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে এসব ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ করে দিচ্ছেন খোদ পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার অপারেটররা। এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্য গড়ে উঠেছে একটি চক্র। এমন চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- দিনাজপুরের বিরল পৌরসভার কম্পিউটার অপারেটর মো. আব্দুর রশিদ, বিরলের রাণীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর সোহেল চন্দ্র, মো. শহিদুল ইসলাম মুন্না, মো. রাসেল খান ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

হারুন অর রশীদ বলেন, রশিদ ও সোহেল পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবের আইডি ব্যবহার করে জাতীয় এনআইডি সার্ভার ও জন্ম নিবন্ধনের সার্ভারে প্রবেশ করে এসব করতেন। তাদের কাছে গ্রাহক এনে দিতেন মাঠ পর্যায়ে কাজ করা বাকি তিনজন।

তিনি জানান, চক্রটি জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরির কথা বলে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহগ আকৃষ্ট করতো। নিয়মিত সাইবার টহলের সময়ে এটি নজরে আসে সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগের। বিজ্ঞাপনের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নামে সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইমের কর্মকর্তারা। এক পর্যায়ে এই চক্রটির সন্ধান পায়।

এ বিষয় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, এই চক্রের মূলহোতা মো. আব্দুর রশিদ দিনাজপুরের বিরল পৌরসভার কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত এবং সোহেল চন্দ্র বিরলের ১০ নং রাণীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদে কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করে। তারা দুইজন বাকিদের সহায়তায় কক্সবাজারের রোহিঙ্গা জনগণকে বিরলের অধিবাসী দেখিয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ বানিয়ে দিতো। চক্রের সদস্যরা কাজের ধরণ অনুযায়ী টাকা পেত।

এছাড়াও কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের অন্যান্য পৌরসভা ও ইউনিয়নে তাদের লোকজন আছে। যারা পাঁচ থেকে ত্রিশ হাজার টাকার বিনিময়ে হাজার হাজার মানুষের ভুয়া জন্ম নিবন্ধন করে দিয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button