রাজনীতি

মির্জা ফখরুলের সিঙ্গাপুর যাত্রা নিয়ে রহস্য

রাজনীতি ডেস্ক: সম্প্রতি কারামুক্ত হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চিকিৎসার জন্য আগামী ৭ মার্চ তিনি সিঙ্গাপুরে যেতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ জল্পনা-কল্পনা চলছে। অনেকেই বলছেন, সরকারের আনুকূল্যে জামিন নিয়ে মির্জা ফখরুল এবার বিদেশে যাবেন। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী বলছেন, মির্জা ফখরুল জেল থেকে বের হলে আন্দোলন গতি পাবে- এমনটি ভাবলেও তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। ফলে মির্জা ফখরুলের সিঙ্গাপুর যাত্রা নিয়ে রাজনীতিতে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি মহাসচিব জেল থেকে মুক্তির পর লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানের সঙ্গে দু-একবার কথাবার্তা বলা ছাড়া তেমন কোনো কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হন না। তিনি বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। কারান্তরীণ থাকার কারণে তার শরীর দুর্বল। কিছু রোগ-শোকও দানা বেধেছে। সে কারণেই তিনি আগামী ৭ মার্চ সিঙ্গাপুরে যেতে চান। সব আয়োজনও এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, চিন্তা করা হয়েছিল- মির্জা ফখরুল জেল থেকে বের হলে আন্দোলনের গতি বাড়বে। কিন্তু তেমনটি হচ্ছে না। এরই মধ্যে তিনি দুই একজন নেতাকে ‘রয়ে-সয়ে’ সবকিছু করার পরামর্শ দিয়েছেন। ধীরে ধীরে কর্মসূচি সাজানোর ব্যাপারেও মতামত দিয়েছেন। অর্থাৎ, আন্দোলনের লাগাম টেনে ধরা এবং মির্জা ফখরুলের মধ্যে এক ধরনের সমঝোতামূলক মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তারা প্রশ্ন রাখছেন- তাহলে কি সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেই মির্জা ফখরুল মুক্তি পেয়েছেন? আর সরকারের আনুকূল্যেই কি তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন? তারা বলছেন, মির্জা ফখরুলের সিঙ্গাপুর যাত্রা নিয়ে সব সময়ই এক ধরনের রহস্য তৈরি হয়। বিভিন্ন সময়ে তিনি সিঙ্গাপুরে কেন যান? সেখানে তিনি শুধু কি সফরে যান, নাকি অন্য কোনো কাজে যান? তার সিঙ্গাপুর সফরের খরচ কে বহন করে সেটি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, এরকম ব্যয়বহুল চিকিৎসা মির্জা ফখরুল নিজের টাকায় করবেন- এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।

এর আগেও গুঞ্জন ওঠে, মির্জা ফখরুলের চিকিৎসার খরচ সরকার বহন করে। যদিও মির্জা ফখরুল এ ধরনের বক্তব্যকে অপপ্রচার এবং অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেছেন। কেউ কেউ মনে করেন, সিঙ্গাপুর সফরে গিয়ে তিনি রাজনৈতিক বিভিন্ন দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেন। তারেক জিয়ার অন্তত দুজন একান্ত অনুগত ব্যক্তি আছেন, মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুরে গেলে তারাও সিঙ্গাপুরে যান এবং সেই সময় তারা মির্জা ফখরুলকে নানা বিষয়ে পরামর্শ দেন।

মির্জা ফখরুলের জামিনের পর বিএনপির আন্দোলনে গতি বাড়বে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্প্রতি ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আর কিছুই করার নেই। তাদের সঙ্গে জনগণও নেই। কথা কিছু বলতে হয়, এজন্য মাঝে মাঝে কথামালার চাতুরি করেন বিএনপি নেতারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব‌লেন, বিএনপির রাজনীতিতে মিথ্যাচারে ভরপুর। এটা তাদের চিরাচরিত মিথ্যাচারেরই ধারাবাহিকতা। তাদের সঙ্গে জনগণ নেই, তাদের কর্মীরাও হতাশ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button