ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোয় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাত ছিল
২০১৭ সালে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার আগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়ানোর জন্য যে কয়েক ডজন ফেসবুক পেজ কাজ করেছে তার পিছনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাত ছিল। বুধবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফেসবুকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যাপকবিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়াতে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের শেষের দিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ফেসবুকের বিরুদ্ধে ১৫০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের জন্য মামলা করেছিল। তাদের দাবি, সামাজিক যোগাযেগ মাধ্যমটি তাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ঘৃণাত্মক বক্তব্য রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
মিয়ানমারের জন্য জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়া (আইআইএমএম) জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গোপনে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারণার সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
তদন্তকারীরা একটি নতুন প্রতিবেদনে বলেছেন, সেনাবাহিনী একটি ‘পরিকল্পিত ও সমন্বিত’ পদ্ধতিতে ‘রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ভয় ও ঘৃণা জাগানোর জন্য পরিকল্পিত উপাদান ছড়িয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘লাখ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজগুলোর একটি গোপন নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।’
তদন্ত দলের নতুন বিশ্লেষণে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪৩টি ফেসবুক পেজে পোস্ট করা বিষয়বস্তুর দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, পেজগুলোর বেশিরভাগের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর বাহ্যিক কোনো সম্পর্ক নেই এবং কিছু সেলিব্রিটি সংবাদ ও জনপ্রিয় সংস্কৃতির প্রতি নিবেদিত কনটেন্ট পোস্ট করা হতো। আদতে এর মাধ্যমে ‘ফেসবুকে একটি আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্ক-সামরিক নেটওয়ার্ক গঠন করা হয়েছিল।’ পেজগুলোতে বিদ্বেষমূলক ১০ হাজার ৪৮৫ কনটেন্ট শনাক্ত করা হয়েছে।
তদন্তকারীরা ছয়টি পৃষ্ঠায় ঘৃণাত্মক বক্তৃতা শনাক্ত করেছেন যেগুলি মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ফেসবুক দ্বারা নিষিদ্ধ ২০ জন ব্যক্তি এবং সংস্থার সাথে সংযুক্ত থাকার কারণে সরানো হয়েছিল। যার মধ্যে একটি বাদে সবই প্রকাশ্যে সামরিক বাহিনীর সাথে যুক্ত ছিল।- দ্য জাকার্তা পোস্ট।