ফিচার

হাঁস পালনে সংসারে এসেছে সচ্ছলতা

পুকুরে মাছের সঙ্গে অথবা ঘেরে মাছ চাষের পাশাপাশি হাঁস পালন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন মাগুরার একাধিক বেকার যুবক। জেলার অনেক বেকার যুবক বাণিজ্যিকভিত্তিতে দেশি হাঁস পালন করে দেখেছেন আলোর মুখ। অর্থনৈতিকভাবে হয়েছেন লাভবান। আকিদুল ইসলাম, সোহেল, আশরাফুলের মতো অনেকের সংসারেই এসেছে সচ্ছলতা।

মাগুরা সদরের মঘি ইউনিয়নের হাঁসচাষি আকিদুল ইসলাম বলেন, ৪ একর জমির একটি দিঘিতে প্রথমে মাছ চাষ শুরু করি। কিছুদিন পরেই মাছ চাষের পাশাপাশি শুরু করি দেশি হাঁস পালন। বর্তমানে আমার খামারে এক হাজার হাঁস আছে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নিয়মিত পরিচর্যা করি। এই হাঁস খামার থেকে ৪০০ থেকে ৪৫০টি ডিম আসে। বাজারের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ীরা খামার থেকে ডিম নিয়ে যায়। মাছের সঙ্গে হাঁস চাষ করে পেয়েছি সফলতা। আমার খামার দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক এ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

সদরের চাউলিয়া ইউনিয়নের সিরিজদিয়া বাওড়ে অন্য হাঁসচাষি সোহেল বলেন, খুলনার দৌলতপুর থেকে হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করে হাঁস পালন শুরু করি। বর্তমানে হাঁসের ভ্যাকসিন সংকট থাকায় এ চাষে অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। হাঁসের ভ্যাকসিন দিতে পারলে হাঁস আরো দীর্ঘ স্থায়ী ও সবল হয়। আমার খামারে বর্তমানে ৪০০ হাঁস পালন করছি। আমার হাঁস পালনে অনেক বেকার যুবক এ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। সরকার যদি আমাদের মতো এরকম বেকার যুবকদের ঋণ প্রদান করতো তাহলে দেশের অনেক যুবক এই হাঁস চাষে এগিয়ে আসবে।

সদরের চাঁদপুর গ্রামের দুবাইফেরত যুবক আশরাফুল বলেন, পরিবারের সহযোগিতার জন্য বিদেশ গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক পরিশ্রম করেছি কিন্তু কোনো সফলতা পায়নি। তাই বেকার হয়ে দেশে ফিরে নিজের ২ একর পুকুরে দেশি হাঁস পালন শুরু করি। এ হাঁস চাষে আমার বাড়তি কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। পুকুরের শামুক, লতাপাতা ও প্রাকৃতিক খাদ্য খেয়ে তারা বড় হচ্ছে।

সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জহুরুল আলম বলেন, জেলায় ১২০টি হাঁসের খামার রয়েছে। বেকার যুবকদের উদ্বুদ্ধ, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা জেলায় আরো খামার বাড়াতে চেষ্টা করছি। পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে এসব খামার দেখভালের জন্য কাজ করছেন আমাদের মাঠকর্মীরা। বর্তমান সরকার বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী করতে নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো খামারিদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button