Friday, May 10, 2024
Google search engine
Homeফিচার'বহে না সুবাতাস'

‘বহে না সুবাতাস’

চৈত্র মাস শুরু হয়েছে। শুষ্ক বাতাস। প্রকৃতিতে দাবদাহ। দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা লাফ দিয়ে উঠছে চৈত্রের শুরুতেই। বাকী দিনগুলো তাপদহনে রুক্ষ হবে, আন্দাজ করা যায়।

ঢাকার বাতাস ধারাবাহিকভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ তকমা পাচ্ছে। আসন্ন গরমকালে রাজধানীর বায়ুমানের আরো অবনতি অনিবার্য।

গরমের সূচনাতে প্রতিদিনই একাধিক অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। সড়কে মৃত্যুর মতো আগুনে হতাহতের ঘটনা নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হচ্ছে

এরই মাঝে চলছে কৃচ্ছ্রসাধনার মাস রমজান। তাপ, দুষিত বায়ু, যানজটের সঙ্গে বাজারের অগ্নিমূল্যে নাকাল হচ্ছে রোজাদার সাধারণ মানুষ। কোনোক্রমেই বাজারের অগ্নিমূর্তি শীতল হচ্ছে না। নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল করা যাচ্ছেনা নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েও।

এসবের সঙ্গে আরেক দুঃসংবাদ হলো, জলদস্যু কবলিত বাংলাদেশের জাহাজের অনিশ্চিত ভাগ্য। আফ্রিকার উপকূলে জিম্মি হয়ে নাবিকরা জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

এদিকে, গাজায় চলছেই ইসরাইলি গণহত্যা। ত্রাণ পাচ্ছে না বিপন্ন ফিলিস্তিনিরা। যুদ্ধবিরতির শত আবেদনেও কর্ণপাত করছে না জায়নবাদী ইসরায়েল।

চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই রাশিয়ায় নির্বাচনে যুদ্ধবাজ পুতিন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। পোপ যুদ্ধবিরতির পক্ষে কথা বলে যুদ্ধংদেহী নেতাদের দ্বারা সমালোচিত হয়েছে।

চারিদিকে শুধু উগ্র, তপ্ত, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি। কোথাও ‘বহে না সুবাতাস’। না প্রকৃতি, না সমাজ, কোথাও সুবাতাস ও সুখবরের স্বল্পতা প্রকট। বিপন্নতা, আহাজারি, চাপাকান্না, মানবিকতার আর্তনাদ কাউকে আর্দ্র করে না। কোনো বিপর্যয়ের মনুষ্যত্বে তীব্র হুঙ্কার সঞ্চারিত হতে কমই দেখা যায়।

সামগ্রিক পরিস্থিতির দমবন্ধ ও গুমোট পটভূমিতে উপমা হিসাবে লাগসই মনে হয়, ‘বহে না সুবাতাস’ শব্দবন্ধ। সত্তর দশকের শেষপ্রান্তে কৈশোরকালে কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরিতে পড়ে ছিলাম ‘বহে না সুবাতাস’ নামে একটি গল্পগ্রন্থ। ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বইয়ের লেখক কথাশিল্পী জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত।

জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত কলেজের বার্ষিকীতে জীবনের প্রথম গল্প চর্চা শুরু করেন। এরপর জীবনযাপনের বিচিত্র নিয়মে অবিরাম লিখে যাওয়াই তাঁর নিয়তি। একের পর এক গল্পে তিনি বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন। যেজন্য তাঁকে ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করা হয়।

একেবারে শুরু থেকে তাঁর গল্পে উচ্চারিত হয়েছে। ভিন্ন স্বর। ষাটের দশকে যে কজন গল্পকার তাদের গল্পের মধ্যে জনজীবনের বঞ্চনা, শােষণ, শ্রেণি সংগ্রাম, নিরন্ন মানুষদের জীবনচিত্র তুলে ধরেছেন তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম।

‘বহে না সুবাতাস’-এর আটটি গল্পে জীবনের অপার দুঃখকষ্ট আর আনন্দ বেদনার দীর্ঘশ্বাস খুঁজে পাওয়া যায়। পাঠক এই বইয়ের গল্প পাঠে সন্ধান পাবেন অন্য এক জীবনের, অন্য এক ভুবনের, যা কিনা পুনরাবৃত্তির চক্রে অর্ধ শতক পরে পুনরায় ফিরে এসেছে আজকের বাস্তবতায়

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments