Saturday, May 11, 2024
Google search engine
Homeফিচার‘বাড়ি যেতে আইসা মনে হইছে আমার তো বাড়ি নাই’

‘বাড়ি যেতে আইসা মনে হইছে আমার তো বাড়ি নাই’

রাজু আহম্মেদ : কমলাপুর রেলস্টেশনে বসে থাকা যুবক মো. রাব্বানি হোসেন। ঘুম থেকে উঠে ফুটপাতে নিজের রাজ্য থেকে বিদায় নিয়ে ঈদের বাড়ি ফেরা উৎসবে মেতে সবার সাথে এসেছেন কমলাপুর রেল স্টেশনে। ইচ্ছা ছিল বাড়ি ফিরে ঈদ করবে।

তবে পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই রাব্বানির ক্ষণিকের আনন্দের ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। কমলাপুরে বাড়ি ফিরতে এসে হঠাৎ মনে হয়েছে জীবনের নিঃসঙ্গতার কথা। বাড়ি নেই ফিরবে কোথায়? তাই অসহায়ের মতো নিরবে বসে কাঁদছিলেন তিনি।

রাব্বানির সাথে কথা বলে জানা গেলো তার বাবার নাম জামাল উদ্দিন শেখ। তিনি মারা গেছেন যখন রাব্বানি ছোট। মা মৌসুমি আক্তার কোথায় আছেন জানেন না তিনি। তার মতে হয়ত মারা গেছেন।

প্রতিদিন ঢাকার ফুটপাতে কাটে রাব্বানির রাত। অন্যের সাহায্য ও মাঝে মাঝে কুলির কাজ করে কিছু টাকা আয় হয় রাব্বানির। তা দিয়ে রুটি কলা খেয়ে পেটের ক্ষুদা মেটে। নিজের বাড়ি মনে করেন বিমানবন্দর রেল স্টেশন।তবে নিজ জন্মভূমি কোথায় মনে নেই অসহায় এই যুবকের। একাকিত্ব আর বিষাদে ক্রমশ মানসিক ভারসাম্য হারাতে বসেছে রাব্বানি। কথাতেও নেই তেমন জোর।

আলাপচারিতার এক পর্যায়ে কান্নায় গলা ভারি হয়ে আসছিল রাব্বানির। তবুও জানতে চাই ঈদে থাকবে কোথায়? উত্তরে রাব্বানি বলেন, গুলিস্তানে থাকব। ওইদিন মানুষ খাওয়ায়। আমার তো আর বেশি লাগে না একটা রুটি হলেই পেট ভরে।

বাবা মায়ের স্মৃতির কথা তেমন মনে নেই রাব্বানির। তবে স্বপ্ন নিয়ে তিনি বলেন, মা থাকলে খাওয়াইতো। বাপে টাকা দিত। বিমানবন্দরে যামু কেমনে ভাবতেছি। ওখানে এক লোক আমারে পোলা ডাকে। এক সাথে রাতে থাকি। সে আছে কিনা জানিনা থাকলে কান্না কমবে।

রাব্বানির মতো ঈদ আনন্দের গল্পটা হাজারো ভাসমান মানুষের। রাজধানীর গুলিস্থানেই প্রায় দুই শতাধিক পথশিশুর ঈদ কাটে রাস্তায়। তাদের ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে তারা নিজেই। পথের সাথীরাই তাদের আপনজন। তবে রাব্বানির মতো জীবনের করুন গল্প বদলে গিয়ে সমাজ হোক সমতার, বিবেক হোক মানবতার সেই প্রত্যয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments